আশ্রমপীড়া
প্রথম দৃশ্য
নবকান্ত

নবকান্ত। ওঃ! প্রেমের রহস্য কে ভেদ করতে পারে! না জানি সে কিসের বন্ধন যাতে এক হৃদয়ের সঙ্গে আর-এক হৃদয় বাঁধা পড়ে! কী জ্যোৎ স্নাপাশ, কী পুষ্পসৌরভের ডোর, কী মুকুলিত মধুমাসের মধুর মলয়ানিলের বন্ধন!

নরোত্তমের প্রবেশ

নরোত্তম। কী সর্বনাশ! নবকান্তের হাতে পড়লে তো রক্ষা নেই! ধরলে বুঝি!

নবকান্ত। ( নরোত্তমকে ধরিয়া) ভাই, প্রেমের কী মহান শক্তি!

নরোত্তম। খিদের শক্তি তার চেয়ে বেশি। আমি খেতে যাই, আমাকে ছাড়ো-

নবকান্ত। হৃদয়ের ক্ষুধা-

নরোত্তম। হৃদয়ের নয়, উদরের। আমি খেয়ে আসি-

নবকান্ত। খাওয়ার কথা বলছি নে।

নরোত্তম। তুমি কেন বলবে, আমি বলছি। একটু রোসো, আমি — ঐ যে আদ্যানাথবাবু আসছেন। ওঁকে ধরো, প্রেমের শক্তি বোঝবার লোক এমন আর পাবে না।

[ প্রস্থান

আদ্যানাথের প্রবেশ

নবকান্ত। ( আদ্যানাথকে ধরিয়া) মশায়, প্রেমের কী মহান শক্তি!

আদ্যানাথ। মহান শক্তি কী বাপু! মহতী শক্তি। কারণ, শক্তি শব্দ স্ত্রীলিঙ্গ, তৎপূর্বে -

নবকান্ত। ভেবে দেখুন, প্রেমের সৈন্য নেই, সামন্ত নেই, অথচ প্রেম বিশ্ববিজয়ী। সে আপন জীবন্ত-

আদ্যানাথ। জীবন্ত হতেই পারে না।

নবকান্ত। আজ্ঞে হাঁ, সে আপনার জীবন্ত প্রভাবেই-

আদ্যানাথ। জীবিত বলো-না কেন, তা হলে ব্যাকরণ-

নবকান্ত। জীবন্ত প্রভাবে সর্বত্র আপনার পথ সৃজন-

আদ্যানাথ। সৃজন নয়। সর্জন।

নবকান্ত। পথ সৃজন করে নেয়। এই-যে সূর্যতারাখচিত-

আদ্যানাথ। সর্জন, কেননা সৃজ্‌ ধা-

নবকান্ত। নীলাকাশ, এই-যে বিচিত্রপুষ্পশোভিত-

আদ্যানাথ। সৃজ্‌ ধাতুর উত্তর-

নবকান্ত। পুষ্পকানন-

[ কথোপকথন করিতে করিতে প্রস্থান