শেষরক্ষা

শতেক শিবিকা; কোথা জীবাজি কোথায়

শুধাতে না শুধাতেই ঝটিকার প্রায়

অকস্মাৎ কোলাহলে হতবুদ্ধি করি

মুহূর্তের মাঝে তোরে বলে অপহরি

কে কোথা মিলালো। ক্ষণপরে নতশিরে

জীবাজি বন্ধনমুক্ত এল ধীরে ধীরে—

শুনিনু কেমনে তারে বন্দী করি পথে

লয়ে তার দীপমালা, চড়ি তার রথে,

কাড়ি লয়ে পরি তার বরপরিচ্ছদ

বিজাপুর-যবনের রাজসভাসদ

দস্যুবৃত্তি করি গেল। সে দারুণ রাতে

হোমাগ্নি করিয়া স্পর্শ জীবাজির সাথে

প্রতিজ্ঞা করিনু আমি— দস্যুরক্তপাতে

লব এর প্রতিশোধ। বহুদিন পরে

হয়েছি সে পণমুক্ত। নিশীথসমরে

জীবাজি ত্যজিয়া প্রাণ বীরের সদগতি

লভিয়াছে। রে বিধবা, সেই তোর পতি—

দস্যু সে তো ধর্মনাশী।

অমাবাই।                   ধিক্‌ পিতা, ধিক্‌!

বধেছ পতিরে মোর — আরো মর্মান্তিক

এই মিথ্যা বাক্যশেল। তব ধর্ম-কাছে

পতিত হয়েছি, তবু মম ধর্ম আছে

সমুজ্জ্বল। পত্নী আমি, নহি সেবাদাসী।

বরমাল্যে বরেছিনু তাঁরে ভালোবাসি

শ্রদ্ধাভরে ; ধরেছিনু পতির সন্তান

গর্ভে মোর, বলে করি নাই আত্মদান।

মনে আছে দুই পত্র একদিন রাতে

পেয়েছিনু অন্তঃপুরে গুপ্তদূতী-হাতে —

তুমি লিখেছিলে শুধু, “ হানো, তারে ছুরি। ”

মাতা লিখেছিল, “ পত্রে বিষ দিনু পূরি,

করো তাহা পান। ” যদি বলে পরাজিত

অসহায় সতীধর্ম কেহ কেড়ে নিত

তা হলে কি এতদিন হত না পালন

তোমাদের সে আদেশ? হৃদয় অর্পণ