শেষরক্ষা

[ প্রস্থান

নিবারণ ও কমলমুখীর প্রবেশ

 

কমল। আমার জন্যে আপনি আর কিছু ভাববেন না। এখন ইন্দুর এই গোলটা চুকে গেলেই বাঁচা যায়।

নিবারণ। তাই তো মা, আমাকে ভারি ভাবনা ধরিয়ে দিয়েছে। আমি এ দিকে শিবু ডাক্তারের সঙ্গে কথাবার্তা একরকম স্থির করে বসে আছি, এখন তাকেই বা কী বলি, ললিত চাটুজ্জেকেই বা কোথায় পাওয়া যায়, আর সে বিয়ে করতে রাজি হয় কি না তাই বা কে জানে।

কমল। সেজন্যে ভাববেন না কাকা! আমাদের ইন্দুকে চোখে দেখলে বিয়ে করতে নারাজ হবে, এমন ছেলে কেউ জন্মায় নি।

নিবারণ। ওদের দেখাশোনা হয় কী করে?

কমল। সে আমি সব ঠিক করেছি।

নিবারণ। তুমি কী করে ঠিক করলে মা?

কমল। আমি ওঁকে বলে দিয়েছি, ওঁর বন্ধু ললিতবাবুকে এখানে নিয়ে আসবেন। তার পর একটা উপায় করা যাবে।

নিবারণ। তা সব যেন হল, আমি ভাবছি শিবুকে কী বলব।

কমল। ঐ উনি আসছেন। আমি তবে যাই।

[ প্রস্থান

বিনোদের প্রবেশ

 

বিনোদ। এই যে, আমি আপনার কথাই ভাবছিলুম।

নিবারণ। কেন বাপু, আমি তো তোমার মক্কেল নই।

বিনোদ। আজ্ঞে, আমাকে লজ্জা দেবেন না — আপনি বুঝতেই পারছেন —

নিবারণ। না বাপু, আমি কিছুই বুঝতে পারি নে। আমরা সেকালের লোক।

বিনোদ। আমার স্ত্রী আপনার ওখানে আছেন —

নিবারণ। তা অবশ্য — তাকে তো আমরা ত্যাগ করতে পারি নে।

বিনোদ। আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করে তাঁকে যদি আমার ওখানে পাঠিয়ে দেন —

নিবারণ। বাপু, আবার কেন পালকি-ভাড়াটা লাগবে?

বিনোদ। আপনারা আমাকে কিছু ভুল বুঝছেন। আমার অবস্থা খারাপ ছিল বলেই আমার স্ত্রীকে — তা যাই হোক — তাঁকে ত্যাগ করার অভিপ্রায় ছিল না। এখন আপনারই অনুগ্রহে তো — তা এখন তো অনায়াসে —

নিবারণ। বাপু, এ তো তোমার পোষা পাখি নয়। সে যে সহজে তোমার ওখানে যেতে রাজি হবে, এমন আমার বোধ হয় না।

বিনোদ। আপনি অনুমতি দিলে আমি নিজে গিয়ে তাঁকে অনুনয় বিনয় করে নিয়ে আসতে পারি।

নিবারণ। আচ্ছা, সে বিষয় বিবেচনা করে পরে বলব।