প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
যোগ্য হাতে যাহা পড়ে লভে সৎপাত্র।
পাত্র নাই ধন আছে, থেকেও না থাকা,
পাত্র হাতে ধন, সেই রাজকোষ পাকা।
আহা হা! আপনাদের সঙ্গ অমূল্য।
কিন্তু মহারাজের সঙ্গ কত মূল্যবান, শ্রুতিভূষণমশায় তা বেশ জানেন। তা হলে আসুন শ্রুতিভূষণ, বৈরাগ্যসাধনের ফর্দ যা দিলেন সেটা সংগ্রহ করা যাক।
চলুন তবে চলুন, বিলম্বে কাজ নেই। মন্ত্রী এই সামান্য বিষয় নিয়ে যখন এত অধীর হয়েছেন তখন ওঁকে শান্ত করে এখনি আবার ফিরে আসছি।
আমার সর্বদা ভয় হয় পাছে আপনি রাজাশ্রয় ছেড়ে অরণ্যে চলে যান।
মহারাজ, মনটা মুক্ত থাকলে কিছুই ত্যাগ করতে হয় না — এই রাজগৃহে যতক্ষণ আমার সন্তোষ আছে ততক্ষণ এই আমার অরণ্য। এক্ষণে তবে আসি। মন্ত্রী, চলো চলো।
ঐ যে কবিশেখর আসছে — আমার তপস্যা ভাঙলে বুঝি! ওকে ভয় করি। ওরে পাকাচুল কান ঢেকে থাক্ রে, কবির বাণী যেন প্রবেশপথ না পায়।
মহারাজ, আপনার এই কবিকে নাকি বিদায় করতে চান।
কবিত্ব যে বিদায়-সংবাদ পাঠালে, এখন কবিকে রেখে হবে কী।
সংবাদটা কোথায় পৌঁছল।
ঠিক আমার কানের উপর। চেয়ে দেখো।
পাকাচুল? ওটাকে আপনি ভাবছেন কী।
যৌবনের শ্যামকে মুছে ফেলে সাদা করার চেষ্টা।
কারিকরের মতলব বোঝেন নি। ঐ সাদা ভূমিকার উপরে আবার নূতন রঙ লাগবে।
কই, রঙের আভাস তো দেখি নে।
সেটা গোপনে আছে। সাদার প্রাণের মধ্যে সব রঙেরই বাসা।
চুপ চুপ, চুপ করো, কবি চুপ করো।
মহারাজ, এ যৌবন ম্লান যদি হল তো হোক-না। আরেক যৌবনলক্ষ্মী আসছেন, মহারাজের কেশে তিনি তাঁর শুভ্র মল্লিকার মালা পাঠিয়ে দিয়েছেন— নেপথ্যে সেই মিলনের আয়োজন চলছে।
আরে, আরে, তুমি দেখছি বিপদ বাধাবে কবি। যাও যাও তুমি যাও — ওরে, শ্রুতিভূষণকে দৌড়ে ডেকে নিয়ে আয়।
তাঁকে কেন মহারাজ!
বৈরাগ্য সাধন করব।
সেই খবর শুনেই তো ছুটে এসেছি, এ সাধনায় আমিই ত আপনার সহচর।
তুমি!
হাঁ মহারাজ, আমরাই তো পৃথিবীতে আছি মানুষের আসক্তি মোচন করবার জন্য।