মায়ার খেলা

অশোক।     বিশ্বচরাচর লুপ্ত হয়ে যায়,

এ কী ঘোর প্রেম অন্ধ রাহুপ্রায়

জীবন যৌবন গ্রাসে!

অমর ও কুমার।                    তবে কেন,

তবে কেন মিছে এ কুয়াশা!

মায়াকুমারীগণ।   দেখো চেয়ে, দেখো ঐ কে আসিছে!

চাঁদের আলোতে কার হাসি হাসিছে।

হৃদয়দুয়ার খুলিয়ে দাও, প্রাণের মাঝারে তুলিয়ে লও,

ফুলগন্ধ সাথে তার সুবাস ভাসিছে।

প্রমদা ও সখীগণের প্রবেশ

 

প্রমদা।     সুখে আছি সুখে আছি, সখা, আপন মনে।

 

প্রমদা ও সখীগণ।   কিছু চেয়ো না, দূরে যেয়ো না—

শুধু চেয়ে দেখো, শুধু ঘিরে থাকো কাছাকাছি।

প্রমদা।     সখা, নয়নে শুধু জানাবে প্রেম, নীরবে দিবে প্রাণ,

রচিয়া ললিত মধুর বাণী আড়ালে গাবে গান।

গোপনে তুলিয়া কুসুম গাঁথিয়া রেখে যাবে মালাগাছি।

প্রমদা ও সখীগণ।   মন চেয়ো না, শুধু চেয়ে থাকো,

শুধু ঘিরে থাকো কাছাকাছি।

প্রমদা।     মধুর জীবন, মধুর রজনী, মধুর মলয়বায়।

এই মাধুরী-ধারা বহিছে আপনি, কেহ কিছু নাহি চায়।

আমি আপনার মাঝে আপনি হারা, আপন সৌরভে সারা,

যেন আপনার মন আপনার প্রাণ আপনারে সঁপিয়াছি।

অশোক।     ভালোবেসে দুখ সেও সুখ, সুখ নাহি আপনাতে।

প্রমদা ও সখীগণ।   না না না, সখা, ভুলি নে ছলনাতে।

কুমার।     মন দাও দাও দাও, সখী, দাও পরের হাতে।

প্রমদা ও সখীগণ।   না না না, মোরা ভুলি নে ছলনাতে।

অশোক।     সুখের শিশির নিমেষে শুকায়, সুখ চেয়ে দুখ ভালো—

আনো, সজল বিমল প্রেম ছল ছল নলিন নয়ন-পাতে।

প্রমদা ও সখীগণ।   না না না, মোরা ভুলি নে ছলনাতে।

কুমার।     রবির কিরণে ফুটিয়া নলিনী আপনি টুটিয়া যায়,