রাজা ও রানী

ইলা— তার ম্লান ছায়াখানি সঙ্গে নিয়ে

চিরকাল ভেসে যায় সাগরের পানে।

থাক্‌ থাক্‌ কল্পনা-স্বপন। চলো বোন,

যাই নিত্য কাজে। ওই শোনো চারি দিকে

অরণ্য উঠেছে জেগে বিহঙ্গের গানে।


সপ্তম দৃশ্য
ত্রিচূড়। প্রমোদভবন
বিক্রমদেব ও অমরুরাজ

অমরুরাজ।  তোমারে করিনু সমর্পণ যাহা আছে

মোর। তুমি বীর, তুমি রাজ-অধিরাজ।

তব যোগ্য কন্যা মোর, তারে লহো তুমি।

সহকার মাধবিকা-লতার আশ্রয়।

ক্ষণেক বিলম্ব করো, মহারাজ, তারে

দিই পাঠাইয়া।

[ প্রস্থান

বিক্রমদেব।                     কী মধুর শান্তি হেথা!

চিরন্তন অরণ্য আবাস, সুখসুপ্ত

ঘনচ্ছায়া, নির্ঝরিণী নিরন্তরধ্বনি।

শান্তি যে শীতল এত, এমন গম্ভীর,

এমন নিস্তব্ধ তবু এমন প্রবল

উদার সমুদ্র-সম, বহুদিন ভুলে

ছিনু যেন। মনে হয়, আমার প্রাণের

অনন্ত অনলদাহ সেও যেন হেথা

হারাইয়া ডুবে যায়, না থাকে নির্দেশ—

এত ছায়া, এত স্থান, এত গভীরতা!

এমনি নিভৃত সুখ ছিল আমাদের—

গেল কার অপরাধে? আমার, কি তার?

যারই হোক— এ জনমে আর কি পাব না?

যাও তবে! একেবারে চলে যাও দুরে!