রাজা ও রানী

  মধুজীবী।                           মা-জননী,

এনেছি সঞ্চয় করে কিছু বনমধু

দয়া করে করো মা গ্রহণ।

   সুমিত্রা।                           ভগবান

মঙ্গল করুন তোর!

[ মধুজীবীর প্রস্থান
শিকারীর প্রবেশ

  শিকারী।                        জয় হোক প্রভু!

ছাগ-শিকারের তরে যেতে হবে দূর

গিরিদেশে, দুর্গম সে পথ। তব পদে

প্রণাম করিয়া যাব। জয়সেন গৃহ

মোর দিয়াছে জ্বালায়ে।

কুমারসেন।                        ধিক সে পিশাচ!

  শিকারী।  আমরা শিকারী। যতদিন বন আছে

আমাদের কে পারে করিতে গৃহহীন?

কিছু খাদ্য এনেছি জননী, দরিদ্রের

তুচ্ছ উপহার। আশীর্বাদ করো যেন

ফিরে এসে আমাদের যুবরাজে দেখি

সিংহাসনে।

বাহু বাড়াইয়া

কুমারসেন।         এসো তুমি, এসো আলিঙ্গনে।

[ শিকারীর প্রস্থান

ওই দেখো পল্লব ভেদিয়া পড়িতেছে

রবিকররেখা। যাই নির্ঝরের ধারে,

স্নানসন্ধ্যা করি সমাপন। শিলাতটে

বসে বসে কতক্ষণ দেখি আপনার

ছায়া, আপনারে ছায়া বলে মনে হয়।

নদী হয়ে গেছে চলে এই নির্ঝরিণী

ত্রিচূড়-প্রমোদবন দিয়ে। ইচ্ছা করে

ছায়া মোর ভেসে যায় স্রোতে, যেথা সেই

সন্ধ্যাবেলা বসে থাকে তীরতরুতলে