শেষরক্ষা

ইন্দু।

গান

এবার মিলন-হাওয়ায় হাওয়ায় হেলতে হবে।

ধরা দেবার খেলা এবার খেলতে হবে।

ওগো পথিক, পথের টানে

চলেছিলে মরণ-পানে —

আঙিনাতে আসন এবার মেলতে হবে।

 

মাধবিকার কুঁড়িগুলি আনো তুলে,

মালতিকার মালা গাঁথো নবীন ফুলে।

স্বপ্নস্রোতে ভিড়বি পারে,

বাঁধবি দুজন দুই জনারে —

সেই মায়াজাল হৃদয় ঘিরে ফেলতে হবে।

 

ইন্দু। এখন কবিসম্রাট, এর একটা জবাব দিতে হবে তোমাকে।

বিনোদ। এখনি? হাতে হাতে?

ইন্দু। হাঁ, এখুনি।

বিনোদ। আচ্ছা, দুটো মিনিট সময় দাও।

[ নোটবই লইয়া লিখিতে প্রবৃত্ত

কমল। এ আবার তুই কী খেলা বের করলি ইন্দু!

ইন্দু। কমলদিদি, তুমি যে-খেলা খেলে নিলে এ তার চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ। উনি বাঁধছেন কাব্য, তুমি বেঁধেছ কবিকে।

কমল। ওগো শিকারী, তুমি আর কথা কোয়ো না। তোমার নিজের কবিটির কাহিনী ভুলে গেছ বুঝি? একবার তাকে হল অস্বীকার, আবার হল স্বীকার — মানুষটাকে কি কম নাকাল করা হয়েছে!

ইন্দু। আমার অকবিটিকে আমি কবি বানিয়েছি, এর বেশি কিছু না — কিন্তু তোমার মানুষটি আদিতে ছিলেন কবি, মধ্যে হলেন অকবি, আবার অন্তে উলটো রথে ফিরছেন কবিত্বে, এ কী কম কথা! আমাদের কমল অধিকারীর এই পালাটির নাম দিয়েছি কবি-জগন্নাথের রথযাত্রা। মন্দির থেকে বেরোনো, আবার মন্দিরে ফিরিয়ে আনা। দুদিন বাদেই দেখবি, থিয়েটার-ওয়ালারা ঝুলোঝুলি করবে এটা অভিনয় করবার জন্যে। — লেখা হল কবিবর?

বিনোদ। হয়েছে।

[ ইন্দু ও কমলে মিলিয়া নোটবই লইয়া মনে মনে পাঠ

ইন্দু। পাকা আম নিঙড়ালে রসের সঙ্গে আঁটি বেরিয়ে আসে, এও যে তাই।

বিনোদ। অর্থাৎ?