মানসী
     মাধুরীমদিরা পান করে শেষে
           প্রাণ পথ নাহি চেনে।
     সবে মিলে যেন বাজাইতে চায়
           আমার বাঁশরি কাড়ি,
     পাগলের মতো রচি নব গান,
           নব নব তান ছাড়ি।
     আপন ললিত রাগিণী শুনিয়া
           আপনি অবশ মন—
     ডুবাইতে থাকে কুসুমগন্ধ
           বসন্তসমীরণ।
     আকাশ আমারে আকুলিয়া ধরে,
           ফুল মোরে ঘিরে বসে,
     কেমনে না জানি জ্যোৎস্নাপ্রবাহ
           সর্বশরীরে পশে।
     ভুবন হইতে বাহিরিয়া আসে
           ভুবনমোহিনী মায়া,
     যৌবন-ভরা বাহুপাশে তার
           বেষ্টন করে কায়া।
     চারি দিকে ঘিরি করে আনাগোনা
           কল্পমুরতি কত,
     কুসুমকাননে বেড়াই ফিরিয়া
           যেন বিভোরের মতো।
     শ্লথ হয়ে আসে হৃদয়তন্ত্রী,
           বীণা খসে যায় পড়ি,
     নাহি বাজে আর হরিনামগান
           বরষ বরষ ধরি।
     হরিহীন সেই অনাথ বাসনা
           পিয়াসে জগতে ফিরে—
     বাড়ে তৃষা, কোথা পিপাসার জল
           অকূল লবণনীরে।
     গিয়েছিল, দেবী, সেই ঘোর তৃষা
           তোমার রূপের ধারে—