সন্ধ্যাসংগীত

          আয় সখি কাছে মোর আয়,

          কথা এক শুধাব তোমায় —

  এত গান শুনালেম এত অনুরাগে

          কথা তার বুকে কি লো লাগে?

          একটি নিশ্বাস কি লো জাগে?

  কথা শুধু শুনিয়া কি যাস?

          ভালো মন্দ বুঝিস কেবল?

            প্রাণের ভিতর হতে

          উঠে না একটি অশ্রুজল?


বিষ ও সুধা

অস্ত গেল দিনমণি। সন্ধ্যা আসি ধীরে

দিবসের অন্ধকার সমাধির ’পরে

তারকার ফুলরাশি দিল ছড়াইয়া।

সাবধানে অতি ধীরে নায়ক যেমন

ঘুমন্ত প্রিয়ার মুখ করয়ে চুম্বন,

দিন-পরিশ্রমে ক্লান্ত পৃথিবীর দেহ

অতি ধীরে পরশিল সায়াহ্নের বায়ু।

দুরন্ত তরঙ্গগুলি যমুনার কোলে

সারাদিন খেলা করি পড়েছে ঘুমায়ে।

ভগ্ন দেবালয়খানি যমুনার ধারে,

শিকড়ে শিকড়ে তার ছায়ি জীর্ণ দেহ

বট অশত্থের গাছ জড়াজড়ি করি

আঁধারিয়া রাখিয়াছে ভগন হৃদয়,

দুয়েকটি বায়ূচ্ছ্বাস পথ ভুলি গিয়া

আঁধার আলয়ে তার হয়েছে আটক,

অধীর হইয়া তারা হেথায় হোথায়

হু হু করি বেড়াইছে পথ খুঁজি খুঁজি!

শুন সন্ধ্যে! আবার এসেছি আমি হেথা,

নীরব আঁধারে তব বসিয়া বসিয়া