বন-ফুল
এ বক্ষে হৃদয় নাই, নাইক পরাণ,
     একখানি প্রতিমূর্ত্তি রেখেছি শরীরে—
রহিবে, যদিন প্রাণ হবে বহমান
     রহিবে, যদিন রক্ত রবে শীরে শীরে!

সেই মূর্ত্তি নীরদের! সে মূর্ত্তি মোহন
     রাখিলে বুকের মধ্যে পাপ কেন হবে?
তবুও সে পাপ— আহা নীরদ যখন
     বলেছে, নিশ্চয় তারে পাপ বলি তবে!

তবু মুছিব না অশ্রু এ নয়ান হোতে,
     কেন বা জানিতে চাব পাপ কারে বলি?
দেখুক জনক মোর ওই চন্দ্র হোতে
     দেখুন জননী মোর আঁখি দুই মেলি!

     নীরজা গাইত ‘চল্‌ চন্দ্রলোকে রবি।
সুধাময় চন্দ্রলোক,    নাই সেথা দুখ শোক,
     সকলি সেথায় নব ছবি!

ফুলবক্ষে কীট নাই, বিদ্যুতে অশনি নাই,
     কাঁটা নাই গোলাপের পাশে!
হাসিতে উপেক্ষা নাই,    অশ্রুতে বিষাদ নাই,
     নিরাশার বিষ নাই শ্বাসে।

নিশীথে আঁধার নাই,    আলোকে তীব্রতা নাই,
     কোলাহল নাইক দিবায়!
আশায় নাইক অন্ত,    নূতনত্বে নাই অন্ত,
     তৃপ্তি নাই মাধুর্য্যশোভায়।

লতিকা কুসুমময়,    কুসুম সুরভিময়,
     সুরভি মৃদুতাময় যেথা!
জীবন স্বপনময়,    স্বপন প্রমোদময়,