প্রকৃতির প্রতিশোধ
এক মুঠা ফুল যদি ভালো লাগে তোর
এক মুঠা ধুলা সেও কী করিল দোষ?
ভালো মন্দ কেন লাগে? সবই অর্থহীন।
আজ বৎসে, সারাদিন কাটালি কী করে?
বালিকা।    ওই দেখো—চুপি চুপি এস এই দিকে।
সারাদিন মোর সাথে খেলা করে করে
সাঁঝেতে লতাটি মোর ঘুমিয়ে পড়েছে।
নুইয়ে পড়েছে ভুঁয়ে কচি ডালগুলি,
পাতাগুলি মুদে গেছে জড়াজড়ি করে।
এস পিতা, এইখানে বসো এর কাছে —
ধীরে ধীরে গায়ে দাও হাতটি বুলিয়ে।


স্বগত


সন্ন্যাসী।     এ কী রে মদিরা আমি করিতেছি পান।
এ কী মধু অচেতনা পশিছে হৃদয়ে!
এ কী রে স্বপন-ঘোরে ছাইছে নয়ন!
আবেশে পরানে আসে গোধূলি ঘনায়ে।
পড়িছে জ্ঞানের চোখে মেঘ-আবরণ।
ধীরে ধীরে মোহময় মরণের ছায়া
কেন রে আমারে যেন আচ্ছন্ন করিছে।


সহসা ফুল ফল ছিঁড়িয়া ফেলিয়া,
    ভূমিতে পদাঘাত করিয়া


দূর হোক — এ সকল কিছু ভালো নয় —
বালিকা, বালিকা তোর এ কী ছেলেখেলা।
আমি যে সন্ন্যাসী যোগী মুক্ত নির্বিকার,
সংসারের গ্রন্থিহীন, স্বাধীন সবল,
এ ধুলায় ঢাকিবি কি আমার নয়ন?


কিয়ৎক্ষণ থামিয়া


বাছা রে, অমন করে চাহিয়া কেন রে!
কেন রে নয়ন ছুটি করে ছল ছল।
জানিস নে তুই, মোরা সন্ন্যাসী বিরাগী,
আমাদের এ-সকল ভালো নাহি লাগে।