রুদ্রচণ্ড
রাজ্য গেল, ধন গেল, সব গেল মোর,
কূলে এসে ডুবে গেল যত আশা ছিল!
শুধু এই ছুরি আছে, আর এই হৃদি
আগ্নেয় গিরির চেয়ে জ্বলন্ত গহ্বর!
মোরে নির্বাসন! হায়, কি বলিব পৃথ্বী,—
এ নির্বাসনের ধার শুধিতাম আমি
পৃথ্বীতে থাকিত যদি এমন নরক
যন্ত্রণা জীবন যেথা এক নাম ধরে,
জীবননিদাঘে যেথা নাই মৃত্যুছায়া!
মোরে নির্বাসন! কেন, কোন্‌ অপরাধে?
অপরাধ! শতবার লক্ষবার আমি
অপরাধ করি যদি কে সে পৃথ্বীরাজ!
বিচার করিতে তার কোন্‌ অধিকার!
নাহয় দুরাশা মোর করিতে সাধন
শত শত মানুষের লয়েছি মস্তক—
তুমি কর নাই? তোমার দুরাশাযজ্ঞে
লক্ষ মানবের রক্ত দাও নি আহুতি?
লক্ষ লক্ষ গ্রাম দেশ কর নি উচ্ছিন্ন?
লক্ষ লক্ষ রমণীরে কর নি বিধবা?
শুধু অভিমান তব তৃপ্ত করিবারে—
ভ্রাতা তব জয়চাঁদ, তার রাজ্য দেশ
ভূমিসাৎ করিতে কর নি আয়োজন?
পৃথ্বীতেই তোমার কি হবে না বিচার?
নরকের অধিষ্ঠাতৃদেব, শুন তুমি,
এই বাহু যদি নাহি হয় গো অসাড়,
রক্তহীন যদি নাহি হয় এ ধমনী,
তবে এই ছুরিকাটি এই হস্তে ধরি
উরসে খোদিব তার মরণের পথ!
হৃদয় এমন মোর হয়েছে অধীর
পারি নে থাকিতে হেথা স্থির হ’য়ে আর!
চলিনু, অমিয়া, আমি— তুই থাক্‌ হেথা,
চলিনু গুহায় আমি করিগে ভ্রমণ।