রুদ্রচণ্ড
চিরজীবী হউক সে অগ্নিকুণ্ডমাঝে!
মুখ ঢাকিস নে তুই, শোন্ তোরে বলি,
পুনরায় যদি তোর আপনার ভাই—
চাঁদ কবি এ কাননে করে পদার্পণ
এই যে ছুরিকা আছে কলঙ্ক ইহার
তাহার উত্তপ্ত রক্তে করিব ক্ষালন!
অমিয়া। ও কথা বোল’ না পিতা—
রুদ্রচণ্ড। চুপ্, শোন্ বলি;
জীবন্তে ছুরিকা দিয়া বিঁধিয়া বিঁধিয়া
শত খণ্ড করি তার ফেলিব শরীর,
পাণ্ডুবর্ণ আঁখি-মুদা ছিন্ন মুণ্ড তার
এই বৃক্ষশাখা-’পরে দিব টাঙাইয়া,
ভিজিবে বর্ষার জলে, পুড়িবে তপনে
যতদিনে বাহিরিয়া না পড়ে কঙ্কাল!
শুনিয়া কাঁপিতেছিস, দেখিবি যখন
মস্তকের কেশ তোর উঠিবে শিহরি!
আপনার ভাই তোর! কে সে চাঁদ কবি!
হতভাগ্য পৃথ্বীরাজ, তারি সভাসদ!
সে পৃথ্বীরাজের হীন জীবন মরণ
এই ছুরিকার ’পরে রয়েছে ঝুলান’!
অমিয়া। থাম পিতা, থাম থাম, ও কথা বোলো না!
শত শত অভাগার শোণিতের ধারা
তোমার ছুরিকা ওই করিয়াছে পান,
তবুও— তবুও ওর মিটে নি পিপাসা?
কত বিধবার আহা কত অনাথার
নিদারুণ মর্ম্মভেদী হাহাকারধ্বনি
তোমার নিষ্ঠুর কর্ণ করিয়াছে পান,
তবুও তবুও ওর মিটে নি কি তৃষা?
রুদ্রচণ্ড। [আপনার মনে]—
মিটে নাই! মিটে নাই! মোর নির্বাসন!
রাজ্য ছিল, ধন ছিল, সব ছিল মোর,
আর কত শত আশা ছিল এই হৃদে—