রুদ্রচণ্ড
          কেন তার সাথে আমি কহিব না কথা!
সেকি পিতা? তারে তুমি     দেখেছে ত কত বার,
          তবু কি তাহারে তুমি ভালোবাস নাই!
এমন মূরতি আহা,     সে যেন দেবতা-সম,
          এমন কে আছে তারে ভাল যে না বাসে!
এই যে আঁধার বন     তার পদার্পণ হ’লে
          এও যেন হেসে ওঠে মনের হরষে!
এই যে কুটীর, এও     কোল বাড়াইয়া দেয়,
          অভ্যর্থনা করে নি যে কোনো অতিথিরে!
ভ্রূকুটি কোরো না পিতা,     ওই ভ্রূকুটির ভয়ে
          সমস্ত তোমার আজ্ঞা করেছি পালন।
পায়ে পড়ি ক্ষমা কর—      এই ভিক্ষা দাও পিতা,
          এ ভালবাসায় মোর করিও না রোষ!
রুদ্রচণ্ড।   রুদ্রচণ্ড। মাতৃস্তন্য কেন তোর হয় নাই বিষ!
           অথবা ভূমিষ্ঠশয্যা চিতাশয্যা তোর!
অমিয়া।     অমিয়া। তাই যদি হ’ত, পিতা, বড়ো ভাল হ’ত!
কে জানে মনের মধ্যে কি হয়েছে মোর,
বরষার মেঘ যদি হইতাম আমি
বর্ষিয়া সহস্রধারে অশ্রুজলরাশি
বজ্রনাদে করিতাম আকুল বিলাপ!
আগে তো লাগিত ভালো জোছনার আলো,
ফুটন্ত ফুলের গুচ্ছ, বকুলতলাটি—
ভ্রূকুটির ভয়ে তব ডরিয়া ডরিয়া
তাহাদেরও ’পরে মোর জন্মেছে বিরাগ!
শুধু একজন আছে যার মুখ চেয়ে
বড়োই হরষে পিতা সব যাই ভুলে,
দূর হ’তে দেখি তারে আকুল হৃদয়
দেহ ছাড়ি তাড়াতাড়ি বাহিরিতে চায়!
সে আইলে তার কাছে যেতে দিও মোরে!
সে যে পিতা অমিয়ার আপনার ভাই!
রুদ্রচণ্ড।     বটে বটে, সে তোমার আপনার ভাই!
শত তীক্ষ্ণ বজ্র তার পড়ুক মস্তকে,