ভগ্নহৃদয়

সরমে চরণ সরে না যেন!

ফিরিবে ফিরিবে মনে মনে করি

চরণ ফিরিতে পারে না যেন!

অনিল অমনি দূর হতে আসি

ধরি তার হাতখানি

কহে যে কত-কি হৃদয়-গলানো

সোহাগে মাখানো বাণী।

আমি ছিনু, সখি, লুকিয়ে তখন

গাছের আড়ালে আসি,

লুকিয়ে লুকিয়ে দেখিতেছিলেম

রাখিতে পারি নে হাসি!

কত কথা ক’য়ে কত হাত ধরি

কত শত বার সাধাসাধি করি

বসাইল যুবা ললিতা বালারে

বকুল গাছের ছায়।

মাথার উপরে ঝরে শত ফুল—

যেন গো করুণ তরুণ বকুল

ফুল চাপা দিয়ে লাজুক মেয়েরে

ঢাকিয়া ফেলিতে চায়!

ললিতার হাত কাঁপে থর থর,

আঁখি দুটি নত মাটির উপর,

ভূমি হতে এক কুসুম তুলিয়া

ছিঁড়িতেছে শত ভাগে।

লাজনত মুখ ধরিয়া তাহার

অনিল রাখিল বুকের মাঝার,

অনিমিষ আঁখি মেলিয়া যুবক

চাহি থাকে মুখবাগে!

আদরে ভাসিয়া ললিতার চোখে

বাহিরে সলিলধার—

সোহাগে সরমে প্রণয়ে গলিয়া

আঁখি দুটি তার পড়িল ঢলিয়া,

হাসি ও নয়নসলিলে মিলিয়া