ভগ্নহৃদয়
কি শোভা ধরিল মুখানি তার!
আমি, সখি, আর নারিনু থাকিতে—
সুমুখে পড়িনু আসি,
করতালি দিয়ে উপহাস কত
করিলাম হাসি হাসি!
ললিতা অমনি চমকি উঠিল,
মুখেতে একটি কথা না ফুটিল,
আকুল ব্যাকুল হইয়া সরমে
লুকাতে ঠাঁই না পায়।
ছুটিয়ে পলায়ে এলেম অমনি,
হেসে হেসে আর বাঁচি নে সজনি,
সেদিন হইতে আমারে হেরিলে
ললিতা সরমে মরিয়া যায়!
মুরলা। আহা, কেন বাধা দিতে গেলি তাহাদের কাছে?
চপলা। বাধা না পাইলে, সখি, সুখেতে কি সুখ আছে?
মুরলা। সূর্যমুখী ফুল, সখি, আমি ভালোবাসি বড়ো—
দু চারিটি তুলে এনে আজিকে করিস্ জড়ো।
মনে বড়ো সাধ তার দেখে রবিমুখ-পানে,
রবি যেখা মাথা তার লোয়ে যায় সেইখানে!
তবু মনোআশা হায় মনেই মিশায়ে যায়,
মুখানি তুলিতে নারে সরমেতে জড়সড়!
সে ফুলে সাজাবি দেহ লাজময়ী ললিতার,
লজ্জাবতী পাতা দিয়ে ঢাকিবি শয়ন তার;
কমল আনিয়া তুলি লাজে-রাঙা পাপ্ড়িগুলি
গাঁথি গাঁথি নিরমিয়া দিবি ঘোমটার ধার!
পাতা-ঢাকা আধ-ফুটো লাজুক গোলাপ দুটো
আনিস্, দুলায়ে দিবি সুচারু অলকে তার!
সহসা রজনী-গন্ধা প্রভাতের আলো দেখে
ভাবিয়া না পায় ঠাঁই কোথা মুখ রাখে ঢেকে—
আকুল সে ফুলগুলি যতনে আনিস্ তুলি,
তাই দিয়ে গেঁথে গেঁথে বিরচিবি কণ্ঠহার।
চপলা। তুই, সখি, আয়— একেলা আমার