ভগ্নহৃদয়
আপনি মুরলা তাহা জানিতে পার না!
হয়ত গো যৌবনের বসন্তসমীরে
মানসকুসুম তব ফুটেছে সুধীরে,
প্রণয়বারির তরে তৃষায় আকুল
ম্রিয়মাণ হ’য়ে বুঝি পড়েছে সে ফুল?
পেয়েছ কি যুবা কোন মনের মতন?
ভালোবাসো, ভালোবাসা করহ গ্রহণ—
তা হ’লে হৃদয় তব পাইবে জীবন নব,
উচ্ছ্বাসে উচ্ছ্বাসময় হেরিবে ভুবন।
মুরলা। [স্বগত] বুঝিলে না— বুঝিলে না— কবি গো, এখনো
বুঝিলে না এ প্রাণের কথা!
দেবতা গো বলো দাও, এ হৃদয়ে বলো দাও,
পারি যেন লুকাতে এ ব্যথা।
জানি, কবি, ভালো তুমি বাস’ নাক মোরে—
তা হ’লে এ মন তুমি চিনিবে কি কোরে?
একটুকু ভালো যদি বাসিতে আমারে
তা হ’লে কি কোন কথা এ মনের কোনো ব্যথা
তোমার কাছেতে, কবি, লুকায়ে থাকিতে পারে?
তাহা হ’লে প্রতি ভাবে, প্রতি ব্যবহারে,
মুখ দেখে, আঁখি দেখে, প্রত্যেক নিশ্বাস থেকে
বুঝিতে যা গুপ্ত আছে বুকের মাঝারে।
প্রেমের নয়ন থেকে প্রেম কি লুকানো থাকে?
তবে থাক্, থাক্ সব, বুকে থাক্ গাঁথা—
বুক যদি ফেটে যায়— ভেঙ্গে যায়— চুরে যায়—
তবু রবে লুকানো এ কথা।
দেবতা গো বলো দাও— এ হৃদয়ে বলো দাও
পারি যেন লুকাতে এ ব্যথা!
কবি। বহুদিন হ’তে, সখি, আমার হৃদয়
হোয়েছে কেমন যেন অশান্তি-আলয়।
চরাচর-ব্যাপী এই বোম-পারাবার
সহসা হারায় যদি আলোক তাহার,
আলোকের পিপাসায় আকুল হইয়া