ভগ্নহৃদয়
বলো, সখি, পূর্ণিমা কি আমাদের রাত?
এস তবে দুই জনে     বসি হেথা এক সনে,
করি আপনার মনে রজনী প্রভাত!
গান
নীরব রজনী দেখ মগ্ন জোছনায়।
ধীরে ধীরে অতিধিরে— অতিধীরে গাও গো!
ঘুমঘোরময় গান বিভাবরী গায়,
রজনীর কণ্ঠ-সাথে সুকণ্ঠ মিলাও গো!
নিশীথের সুনীরব শিশিরের সম,
নিশীথের সুনীরব সমীরের সম,
নিশীথের সুনীরব জোছনা সমান
অতি— অতি— অতিধীরে কর সখি গান!
নিশার কুহক-বলে নীরবতাসিন্ধুতলে
মগ্ন হয়ে ঘুমাইছে বিশ্ব চরাচর—
প্রশান্ত সাগরে হেন তরঙ্গ না তুলে যেন
অধীর-উচ্ছ্বাস-ময় সংগীতের স্বর!
তটিনী কি শান্ত আছে! ঘুমাইয়া পড়িয়াছে
বাতাসের মৃদুহস্ত-পরশে এমনি,
ভুলে যদি ঘুমে ঘুমে তটের চরণ চুমে
সে চুম্বনধ্বনি শুনে চমকে আপনি!
তাই বলি অতি ধীরে— অতি ধীরে গাও গো,
রজনীর কণ্ঠ-সাথে সুকণ্ঠ মিলাও গো!


মুরলার প্রতি
কেন লো মলিন, সখি, মুখানি তোমার?
কাছে এস, মোর পাশে বোসো একবার!
কেন, সখি, বল্‌ মোরে,     যখনি দেখেছি তোরে
মাটি-পানে নত দুটি বিষণ্ন নয়ান!
আননের দুই পাশ অবদ্ধ কুন্তলরাশ—
করুণ ও মুখখানি বড়ো, সখি, ম্লান!
মুরলা।     সত্য ম্লান কি গো, কবি, এ মুখ আমার?