ভগ্নহৃদয়
গীতের প্লাবনে আকাশ পাতাল
    ডুবিয়া গেল গো নিমেষমাঝে।
আকাশব্যাপিনী জোছনার, সখি,
    মরমে মরমে পশিল গান!
পৃথিবী-ডুবান’ জোছনারে, সখি,
    ডুবায়ে দিল সে মধুর তান!
একটি একটি করি কথা তার
    পশিতে লাগিল শ্রবণে যত,
শোণিত লাগিল উঠিতে পড়িতে,
    হৃদয় হইল পাগল-মতো।
একটি একটি একটি করিয়া
     গাঁথিতে লাগিনু কথা,
গান গাওয়া তার ফুরাল’ যখন
    ফুরাল’ আমার গাঁথা।
মুরলা, সখি লো, বল্‌ দেখি মোরে
কি গান গাহিতেছিল মধুস্বরে
    বিশ্ব করি বিমোহিত!
আমারি রচিত— আমারি রচিত—
    আমারি রচিত গীত!
মুরলা, সখি লো, বল্‌ দেখি মোরে
কে গান গাহিতেছিল মধুস্বরে
    উনমাদ করি মন!
আমারি নলিনী— আমারি নলিনী—
    আমারি হৃদয়ধন।
সখি, মোর সেই মনের কথা,
সখি, মোর সেই গানের কথা,
দিয়াছে মাজিয়া তার স্বর দিয়া—
প্রতি কথা তার উঠে উজলিয়া
    মেঘে রবিকর যথা।
শুনিবি কি গান গাহিতেছিল সে
    অমৃতমধুর রবে?
    শোন্‌ মন দিয়ে তবে।