ভগ্নহৃদয়
কবির প্রবেশ
কবি। সকাল হইতে, মুরলা সখি লো,
খুঁজিয়া বেড়াই তোরে,
বড়োই অধীর-হরষে আমার
হৃদয় গিয়েছে ভরে।
পারি নে রাখিতে প্রাণের উচ্ছ্বাস,
আকুল ব্যাকুল করিতে প্রকাশ,
অধীর হইয়া সকাল হইতে
খুঁজিয়া বেড়াই তোরে।
তোরে না কহিলে হৃদয়ের কথা
মন শান্তি নাহি মানে;
কেন, সখি, তুই ব’সে রয়েছিস্
একা একা এই খানে?
দেখ, সখি, আজ গিয়েছিনু আমি
প্রমোদকাননে তার,
গাছের ছায়াতে আপনার মনে
বসেছিনু একধার।—
মুরলা, হেথায় অন্ধকার ঘোর,
দেখিতে পাই নে মুখখানি তোর,
এত অন্ধকার ভালো নাহি লাগে,
ওই খানে যাই উঠে।
ওখানে পড়েছে রবির কিরণ,
সমুখে সরসী হাসিছে কেমন,
গাছের উপরে শাখা শাখা ভরে
বকুল রয়েছে ফুটে।
এই খানে আয়, এই খানে বোস্!
শোন্ সখি তার পরে—
গাছের তলায় ছিলাম বসিয়া
মগন ভাবনা-ভরে।
গীতস্বর শুনি চমকি উঠিনু,
শুনিনু মধুর বাঁশরী বাজে।