শেষরক্ষা
আশীর্বাদ করতে আসবে, তখন বলে কিনা ‘ বিয়ে করব না '! আমি এখন চৌধুরীদের বলি কী!

চন্দ্রকান্তের প্রবেশ

 

চন্দ্রকান্ত। ( গদাইয়ের প্রতি) সমস্ত শুনলুম। ভালো একটি গোল বাধিয়েছ যা হোক। — এই যে ডাক্তারবাবু, ভালো আছেন তো?

শিবচরণ। ভালো আর থাকতে দিলে কই। এই দেখো-না চন্দর, ওর নিজেরই কথামত একটি পাত্রী স্থির করলুম, যখন সমস্ত ঠিক হয়ে গেল তখন বলে কিনা ‘ তাকে বিয়ে করব না '। আমি এখন চৌধুরীদের বলি কী?

গদাই। বাবা, তুমি তাদের একটু বুঝিয়ে বললেই —

শিবচরণ। তোমার মাথা! তাদের বোঝাতে হবে, আমার ভীমরতি ধরেছে আর আমার ছেলেটি আস্ত খেপা — তা তাদের বুঝতে বিলম্ব হবে না।

চন্দ্রকান্ত। আপনি কিছু ভাববেন না। সে মেয়েটির আর-একটি পাত্র জুটিয়ে দিলেই হবে।

শিবচরণ। সে তেমন মেয়েই নয়। তার টাকা আছে ঢের, কিন্তু চেহারা দেখে পাত্র এগোয় না। আমার বংশের এই অকাল কুষ্মাণ্ডের মতো এত বড়ো বাঁদর দ্বিতীয় আর কোথায় পাবে যে তাকে বিয়ে করতে রাজি হবে।

চন্দ্রকান্ত। সে আমার উপর ভার রইল। আমি সমস্ত ঠিকঠাক করে দেব। এখন নিশ্চিন্ত মনে নিবারণবাবুর মেয়ের সঙ্গে বিবাহ স্থির করুন।

শিবচরণ। যদি পার চন্দর, তো বড়ো উপকার হয়। এই বাগবাজারের হাত থেকে মানে মানে নিস্তার পেলে বাঁচি। এ দিকে আমি নিবারণের কাছে মুখ দেখাতে পারছি নে, পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

চন্দ্রকান্ত। সেজন্যে কোনো ভাবনা নেই। আমি প্রায় অর্ধেক কাজ গুছিয়ে এসে তবে আপনাকে বলছি। এখন বাকিটুকু সেরে আসি।

[ প্রস্থান

নিবারণের প্রবেশ

 

শিবচরণ। আরে এসো ভাই, এসো।

নিবারণ। ভালো আছ ভাই? যা হোক শিবু, কথা তো স্থির?

শিবচরণ। সে তো বরাবরই স্থির আছে, এখন তোমার মরজি হলেই হয়।

নিবারণ। আমারও তো সমস্ত ঠিক হয়ে আছে, এখন হয়ে গেলেই চুকে যায়।

শিবচরণ। তবে আর কি, দিনক্ষণ দেখে —

নিবারণ। সে-সব কথা পরে হবে — এখন কিছু মিষ্টিমুখ করবে চলো।

শিবচরণ। না ভাই, আমার অভ্যাস নেই, এখন থাক্‌ — অসময়ে খেয়েছি কি আর আমার মাথা ধরেছে —

নিবারণ। না না, সে হবে না, কিছু খেতে হচ্ছে। বাপু, তুমিও এসো।

[ প্রস্থান