রাজা ও রানী

অয়ি প্রিয়ে, কত প্রেম, কতই নির্ভর!

কোমল হৃদয়তলে তীক্ষ্ম কথা বিঁধে

প্রেম-উৎস ছুটে — অর্জুনের শরাঘাতে

মর্মাহত ধরণীর ভোগবতী-সম।

   নেপথ্যে।  মহারানী!

    সুমিত্রা।  ( অশ্রু মুছিয়া) দেবদত্ত! আর্য, কী সংবাদ?


দেবদত্তের প্রবেশ

  দেবদত্ত।  রাজ্যের নায়কগণ রাজনিমন্ত্রণ

করিয়াছে অবহেলা, বিদ্রোহের তরে

হয়েছে প্রস্তুত।

    সুমিত্রা।                    শুনিতেছ মহারাজ?

বিক্রমদেব।  দেবদত্ত, অন্তঃপুর নহে মন্ত্রগৃহ।

  দেবদত্ত।  মহারাজ, মন্ত্রগৃহ অন্তঃপুর নহে,

তাই সেথা নৃপতির পাই নে দর্শন।

    সুমিত্রা।  স্পর্ধিত কুক্কুর যত বর্ধিত হয়েছে

রাজ্যের উচ্ছিষ্ট অন্নে! রাজার বিরুদ্ধে

বিদ্রোহ করিতে চাহে! এ কী অহংকার!

মহারাজ, মন্ত্রণার আছে কি সময়?

মন্ত্রণার কী আছে বিষয়! সৈন্য লয়ে

যাও অবিলম্বে, রক্তশোষী কীটদের

দলন করিয়া ফেলো চরণের তলে।

বিক্রমদেব। সেনাপতি শত্রুপক্ষ —

    সুমিত্রা।                    নিজে যাও তুমি।

বিক্রমদেব।  আমি কি তোমার উপদ্রব, অভিশাপ,

দুরদৃষ্ট, দুঃস্বপন, করলগ্ন কাঁটা?

হেথা হতে এক পদ নড়িব না, রানী,

পাঠাইব সন্ধির প্রস্তাব। কে ঘটালে

এই উপদ্রব! ব্রাহ্মণে নারীতে মিলে

বিবরের সুপ্তসর্প জাগাইয়া তুলি

এ কী খেলা! আত্মরক্ষা-অসমর্থ যারা

নিশ্চিন্তে ঘটায় তারা পরের বিপদ।