রাজা ও রানী

বাজাতিস, গম্ভীর অনন্দমুখখানি।

সংগীতেরে করে তুলেছিলি তোর সেই

ছোটো ছোটো অঙ্গুলির বশ।

    সুমিত্রা।                             মনে আছে,

খেলা হতে ফিরে এসে শোনাতে আমারে

অদ্ভুত কল্পনাকথা — কোথা দেখেছিলে

অজ্ঞাত নদীর ধারে স্বর্ণস্বর্গপুর,

অলৌকিক কল্পকুঞ্জে কোথায় ফলিত

অমৃতমধুর ফল! ব্যথিত হৃদয়ে

সবিস্ময়ে শুনিতাম ; স্বপ্নে দেখিতাম

সেই কিন্নরকানন।

কুমারসেন।                     বলিতে বলিতে

নিজের কল্পনা শেষে নিজেরে ছলিত।

সত্য মিথ্যা হত একাকার মেঘ আর

গিরির মতন ; দেখিতে পেতেম যেন

দূর শৈলপরপারে রহস্যনগরী।—

শংকর আসিছে ওই ফিরে। শোনা যাক

কী সংবাদ।

শংকরের প্রবেশ

শংকর।             প্রভু তুমি, তুমি মোর রাজা,

ক্ষমা করো বৃদ্ধ এ শংকরে। ক্ষমা করো

রানী, দিদি মোর। মোরে কেন পাঠাইলে

দূত করে রাজার শিবিরে। আমি বৃদ্ধ,

নহি পটু সাবধান বচনবিন্যাসে,

আমি কি সহিতে পারি তব অপমান?

শান্তির প্রস্তাব শুনে যখন হাসিল

ক্ষুদ্র জয়সেন, হাসিমুখে ভৃত্য যুধাজিৎ

করিল সুতীব্র উপহাস, সভ্রূভঙ্গে

কহিলা বিক্রমদেব জালন্ধররাজ

তোমারে বালক, ভীরু — মনে হল যেন

চারি দিকে হাসিতেছে সভাসদ যত