রাজা ও রানী

পরস্পর মুখ চেয়ে, হাসিতেছে দূরে

দ্বারের প্রহরী — পশ্চাতে আছিল যারা

তাদের নীরব হাসি ভুজঙ্গের মতো

যেন পৃষ্ঠে আসি মোর দংশিতে লাগিল।

তখন ভুলিয়া গেনু শিখেছিনু যত

শান্তিপূর্ণ মৃদুবাক্য। কহিলাম রোষে —

‘কলহেরে জান তুমি বীরত্ব বলিয়া,

নারী তুমি, নহ ক্ষত্রবীর। সেই খেদে

মোর রাজা কোষে লয়ে কোষরুদ্ধ অসি

ফিরে যেতেছেন দেশে, জানাইনু সবে। '

শুনিয়া কম্পিততনু জালন্ধরপতি।

প্রস্তুত হতেছে সৈন্য।

    সুমিত্রা।                       ক্ষমা করো ভাই।

    শংকর। এই কি উচিত তব, কাশ্মীরতনয়া

তুমি, ভারতে রটায়ে যাবে কাশ্মীরের

অপমানকথা? বীরের স্বধর্ম হতে

বিরত করো না তুমি আপন ভ্রাতারে,

রাখো এ মিনতি।

    সুমিত্রা।                    বলো না, বলো না আর

শংকর! মার্জনা করো ভাই। পদতলে

পড়িলাম। ওই তব রুদ্ধ কম্পমান

রোষানল নির্বাণ করিতে চাও? আছে

মোর হৃদয়শোণিত। মৌন কেন ভাই।

বাল্যকাল হতে আমি ভালোবাসা তব

পেয়েছি না চেয়ে, আজ আমি ভিক্ষা মাগি

ওই রোষ তব, দাও তাহা।

    শংকর।                            শোনো প্রভু!

কুমারসেন। চুপ করো বৃদ্ধ! যাও তুমি, সৈন্যদের

জানাও আদেশ — এখনি ফিরিতে হবে

কাশ্মীরের পথে।

    শংকর।                   হায় একি অপমান,

পলাতক ভীরু বলে রটিবে অখ্যাতি!