প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
আদিত্য। তোমার বউদি আর আমার মধ্যে মিথ্যাকে খাড়া করে রাখতে পারব না। বাল্যকাল থেকে সরলার সঙ্গে আমার যে সম্বন্ধ তার মধ্যে কোনো অপরাধ নেই সে কথা মান তো?
রমেন। মানি বৈকি।
আদিত্য। সেই সহজ সম্বন্ধের তলায় গভীর ভালোবাসা ঢাকা ছিল, জানতে পারি নি, সে কি আমাদের দোষ?
রমেন। কে বলে দোষ?
আদিত্য। আজ সেই কথাটাই যদি গোপন করি তা হলেই মিথ্যাচরণের অপরাধ হবে। আমি মুখ তুলেই বলব।
রমেন। গোপনই বা করতে যাবে কী জন্যে, আর সমারোহ করে প্রকাশই বা করবে কেন? বউদিদির যা জানবার তা তিনি আপনিই জেনেছেন। আর কটা দিন পরেই তো এই পরম দুঃখের জটা আপনিই এলিয়ে যাবে। তুমি তা নিয়ে মিথ্যে টানাটানি কোরো না। বউদি যা বলতে চান শোনো, তার উত্তরে তোমারো যা বলা উচিত আপনিই সহজ হয়ে যাবে।
নীরজা। মাপ করো, মাপ করো আমাকে, অপরাধ করেছি। এতদিন পরে ত্যাগ কোরো না আমাকে, দূরে ফেলো না আমাকে।
আদিত্য। নীরু, তোমার ব্যথা কি আমি বুঝি নে?
নীরজা। সত্যি বলো আমাকে মাপ করেছ। তুমি প্রসন্ন না হলে মরার পরেও আমার সুখ থাকবে না।
আদিত্য। তুমি তো জানো নীরু, মাঝে মাঝে মনান্তর হয়েছে আমাদের মধ্যে। কিন্তু মনের মিল কি ভেঙেছে তা নিয়ে?
নীরজা। এর আগে তো কোনোদিন বাড়ি ছেড়ে চলে যাও নি তুমি। এবারে গেলে কেন? এত নিষ্ঠুর তোমাকে করেছে কিসে?
আদিত্য। অন্যায় করেছি নীরু, মাপ করতে হবে।
নীরজা। কী বলো তার ঠিক নেই। তোমার কাছ থেকেই আমার সব শাস্তি, সব পুরস্কার। অভিমানে তোমার বিচার করতে গিয়েই তো আমার এমন দশা ঘটেছিল। ঠাকুরপোকে বলেছিলুম সরলাকে ডেকে আনতে, এখনো আনলেন না কেন?
আদিত্য। রাত হয়েছে, এখন থাক্।
নীরজা। ঐ শোনো, আমার মনে হচ্ছে ওরা অপেক্ষা করছে দরজার বাইরে। ঠাকুরপো, ঘরে এসো তোমরা।
এসো বোন, আমার কাছে এসো।