সন্ধ্যাসংগীত

পদতলে বর্তমান মরুভূমি সম।

স্মৃতি আর আশা ছাড়া সত্যকার সুখ

মানুষের ভাগ্যে সখি ঘটে নাকো বুঝি!

বিদেশ হইতে যবে আইসে ফিরিয়া

অতি হতভাগা যেও সেও ভাবে মনে

যারে যারে ভালোবাসে সকলেই বুঝি

রহিয়াছে তার তরে আকুল-হৃদয়ে!

তেমনি কতই সখি করেছিনু আশা,

মনে মনে ভেবেছিনু কত-না হরষে

দামিনী আমার বুঝি তৃষিতনয়নে

পথপানে চেয়ে আছে আমারি আশায়।

আমি গিয়ে কব তারে হরষে কাঁদিয়া,

‘ মুছ অশ্রুজল সখি, বহু দিন পরে

এসেছে বিদেশ হতে ললিত তোমার’।

অমনি দামিনী বুঝি আহ্লাদে উথলি

নীরব অশ্রুর জলে কবে কত কথা।

ফিরিয়া আসিনু যবে — এ কী হল জ্বালা!

কিছুতে নয়নজল নারি সামালিতে।

ফেরো ফেরো চাহিয়ো না এ আঁখির পানে,

প্রাণে বাজে অশ্রুজল দেখাতে তোমায়!

জেনো গো রমণি, জেনো, এত দিন পরে

কাঁদিয়া প্রণয় ভিক্ষা করিতে আসি নি,

এ অশ্রু দুঃখের অশ্রু — এ নহে ভিক্ষার!

কখনো কখনো সখি অন্য মনে যবে

সুবিজন বাতায়নে রয়েছ বসিয়া

সম্মুখে যেতেছে দেখা বিজন প্রান্তর

হেথা হোথা দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন কুটির

হু হু করি বহিতেছে যমুনার বায়ু —

তখন কি সে-দিনের দুয়েকটি কথা

সহসা মনের মধ্যে উঠে না জাগিয়া?

কখন যে জাগি উঠে পার না জানিতে!

দূরতম রাখালের বাঁশিস্বর সম