ভগ্নহৃদয়
ঝরিবে কবিতা তব হৃদে শত-স্রোতে!
হাসিময় সৌন্দর্য্যের কিরণ-পরশে
বিহঙ্গম-হৃদি তব গাহিবে হরষে—
মধুর সঙ্গীতে বিশ্ব করিবে প্লাবন!
সুখে থাকো পূর্ণ মনে,   ভালোবাসো প্রাণপণে
প্রেমযোগ্য নারী যবে পেয়েছ এমন!
[স্বগত]   কেন এত অশ্রু আজি করি বরিষণ?
কেন রে কিসের দুখ?   কেন এত ফাটে বুক?
কিসের যন্ত্রণা মর্ম করিছে দংশন?
কখনো তো কবির অমূল্য ভালোবাসা
অভাগিনী মনে মনে করি নাই আশা!
জানিতাম চিরদিন   রূপহীন গুণহীন
তুচ্ছ মুরলার এই ক্ষুদ্র ভালোবাসা
পুরাতে নারিবে তাঁর প্রণয়পিপাসা—
মোরে ভালোবেসে কবি সুখী হইবে না!
তবু আজ কিসের গো, কিসের যাতনা!
আজ কবি মুছেছেন অশ্রুবারিধার,
বহুদিনকার আশা পূরেছে তাঁহার!
আহা কবি, সুখে থাকো,   আর কিছু চাই নাকো—
এই মুছিলাম অশ্রু, আর কাঁদিব না!
কিসের যাতনা মোর, কিসের ভাবনা
কবি।     ওই দেখ্‌ ফুল তুলে আঁচলটি ভরি
কামিনীর শাখা লয়ে     ওই দেখ্‌ ভয়ে ভয়ে
অতি যত্নে রাখিয়াছে নোয়াইয়া ধরি,
পাছে কুসুমের দল ভূঁয়ে পড়ে ঝরি!
ওই দেখ্‌ উচ্চ শাখে ফুটিয়াছে ফুল,
তুলিবার তরে আহা কতই আকুল!
কিছুতে তুলিতে নারে কত চেষ্টা করি—
শাখাটি ধরিয়া শেষে     নাড়িছে মধুর রোষে,
কুসুম শতধা হয়ে পড়িতেছে ঝরি।
বিফল হইয়া শেষে সখীদের কোলে
ওই দেখ্‌ হেসে হেসে পড়িতেছে ঢলে!