ভগ্নহৃদয়
    একেলা ভ্রমিয়া ফিরে,
ভাবে-মাতোয়ারা আপনার মনে
    গান গাহে ধীরে ধীরে।
নয়নে অধরে মলয়-আকুল
    বসন্ত বিরাজ করে,
মধুর অথচ উদাস হরষ
    ঘুমায় মুখের ’পরে!
হেন ভাব কেন হেরি লো তাহার
    শুধাইব তোর কাছে।
  বড়োই সে সুখে আছে।
মুরলা।     চপলা, সখি লো, দেখেছিস তারে?
    বড়ো কি সে সুখে আছে?
কেমনে বুঝিলি বল্‌ তাহা বল্‌
    বল্‌ সখি মোর কাছে!
    বড়ো কি সে সুখে আছে?
চপলা।     হাঁ লো, সখি, হাঁ, লো— শোন্‌ বলি তোরে—
    আয়, সখি, মোর পাশে—
কবি আমাদের নলিনীবালারে
     মনে মনে ভালোবাসে।
সত্য কহি তোরে, নলিনীরে বড়ো
    ভালো নাহি লাগে মোর—
শুনিয়াছি নাকি পাষাণ হতেও
    মন তার সুকঠোর!
মুরলা।     সে কি কথা বালা! মুখখানি তার
    নহে কি মধুর অতি?
নয়নে কি তার দিবস রজনী
    খেলে না মধুর জ্যোতি?
চপলা।     শুনেছি সে জ্যোতি আলেয়ার চেয়ে
    কপট, চপল নাকি—
পথিকের পথ ভুলাবারি তরে
    জ্বলি উঠে থাকি থাকি!
শুনেছি সে বালা সারাটি জীবন