ভগ্নহৃদয়
আর, লজ্জা— লজ্জা নয়— লজ্জারে করিব জয়—
নাহয় বসিনু কাছে, কিসের সরম তায়!
কোথা লজ্জা— লজ্জা কোথা? এই তো বসিনু হেথা—
এই তো করিনু জয়, এই ত বসিনু কাছে—
বসিব নাথের পাশে কি তাহাতে দোষ আছে?
এখনো— এখনো মোরে দেখিতে পান নি তবে—
তবে কি গো আরো কাছে— আরো কাছে যেতে হবে?
আর নয়— আরো কাছে যাইব কেমন করে?
হেথা তবে বসে থাকি, মালাগুলি গেঁথে রাখি,
এখনি ভাবনা ভাঙি দেখিতে পাইবে মোরে!
যদিবা দেখিতে পায় কি তবে করিবে মনে?
যদি গো বুঝিতে পারে দেখিতে এসেছি তারে,
মিছে মালা-গাঁথা ছলে বসে আছি এইখানে?
অনিল। এই যে ললিতা হোথা— ফুরালো কি মালা গাঁথা?
আরেকটু কাছে এসে নাহয় গাঁথিতে মালা!
এই হেথা কাছে আয়— কিসের সরম তায়?
কেমন গাঁথিলি ফুল একবার দেখি বালা!
আদরিণী— আদরিণী— দেখি হাতখানি তোর!
এমনি করিয়া সখি, বাঁধ্ লো হৃদয় মোর!
একবার দেখি সখি, কাছে আন্ মুখখানি—
এমনি করিয়া রাখ্ বুকের মাঝারে আনি!
কেন, লাজ এত কেন— আঁখি দুটি নত কেন?
কি করেছি? একটি শুধু চুম্বন বইত নয়!
আরেকটি এই লও— অরেকটি এই লও—
আর নয় করিব না বড়ো যদি লাজ হয়!
নাহয় কুন্তল দিয়ে ঢেকে দিই মুখখানি!
দেখিতে আনন তোর ওই চন্দ্র ভাবে-ভোর
এক দৃষ্টে চেয়ে, সখি, রয়েছে অবাক্ মানি!
ওই দেখ্ তারাগুলি সহস্র নয়ন খুলি
ওই মুখটির তরে খুঁজিছে সমস্ত ধরা—
উচিত কি হয়, সখি, তাদের নিরাশ করা—
নয়নে নয়ন রাখি একবার মেল আঁখি,